হিজলা (বরিশাল) প্রতিনিধি: বরিশালের হিজলা উপজেলার তৎকালীন হিজলা উপজেলা আওতাধীন কুচাইপট্টি ইউনিয়নের চর বিশকাটালী মৌজার ৪নং সিটের প্রায় ৭শত একর জমি প্রকৃত মালিকদের ফিরিয়ে দেয়ার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বঞ্চিত ভুক্তভোগী কৃষকেরা।
২১ জুলাই (সোমবার) সকাল ১১টায় হিজলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা তাদের দাবি জানান।
কৃষকদের দাবি ১৯৯১ থেকে ১৯৯৩ সালের মধ্যে তৎকালীন খালেদা জিয়া সরকারের উদ্যোগে বরিশালের হিজলা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের কয়েক হাজার ভূমিহীন কৃষকদের কৃষি কাজে উদ্বুদ্ধ করতে স্থায়ীভাবে ভূমি বন্দোবস্ত দেয়া হয়। কৃষকদের দাবি, তারা ২০০৮ সাল পর্যন্ত ওই জমিতে চাষ করে নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন। কিন্তু ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসী, ভূমিদস্যুরা তাদের জমি দখল করে নেয়।
লিখিত বক্তব্যে মাহফুজ মাতুব্বর বিষয়টি নিয়ে কৃষকদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, সরকারি বন্দোবস্ত পাওয়া জমির মালিকদের প্রতিনিধি মাহফুজ মাতুব্বর। তিনি দাবি করেন, এক সময় বরিশালের হিজলা উপজেলার হিজলা গৌরব্দী ইউনিয়নের আওতাধীন বর্তমান শরিয়তপুর জেলার গোসাইরহাট উপজেলার কুচাইপট্টি ইউনিয়নের চর বিশকাটালী মৌজার প্রায় ৭শত একর জমি সরকারিভাবে বন্দোবস্ত দেয়া হয়। কিন্তু বিগত আওয়ামী সরকারের আমলে শরীয়তপুর জেলা যুবলীগের ভাইস প্রেসিডেন্ট কুচাইপট্টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন স্বপনের ভাই, শীর্ষ ভূমিদস্যু কুচাইপট্টি ইউনিয়ন আওয়ামি লীগের সহ-সভাপতি খোকন (খোকা) বেপারী কৃষকদের জমি জোরপূর্বক দখল করে নেয় এবং বর্তমানে সেখানে দীর্ঘদিন ধরে ভোগ করছে।
হিজলা উপজেলার বরজালিয়া গ্রামের আবুল হাসেম দাবি করেন, “পুলিশ প্রশাসনসহ বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছি, কিন্তু ১৭ বছরেও কোন সমাধান পাইনি।” তার মতে, খোকা বেপারী সাথে কথাবার্তার সময়, রহস্যজনক কারণে প্রশাসন তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
চরজানপুর গ্রামের গনি পাল দাবি করেন, “বর্তমানে খোকা বেপারী জমির কিছু অংশ ছাড়তে চাইলেও স্থানীয় বিএনপি নেতা সুমন মৃধা সেই জমি নিজের কব্জায় নিতে চাইছেন।” এদিকে, এলাকাবাসী জানাচ্ছে, ভূমিদস্যুরা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে, আর প্রশাসন এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এই বিষয়ে কৃষকরা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সুমন মৃধা দাবি করেন, “এগুলো রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপূর্ণ করার জন্য আমার নাম জড়ানো হচ্ছে। আমি কখনো ওই অঞ্চলে যাইনি, অভিযোগকারী কৃষকদের কাউকে আমি চিনি না।” তবে তিনি এই বিষয়েও জানিয়েছেন যে, অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয়দের সহায়তা করার জন্য তিনি প্রস্তুত আছেন।
এ বিষয়ে কুচাইপট্টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও শরীয়তপুর জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি নাসির উদ্দিন স্বপনের বড় ভাই খোকন বেপারী দাবি করেন, “যেসব জমি আমি দখল করেছি, তা আমি ক্রয় করেছি। কারো জমি আমি দখল করিনি।”
ভুক্তভোগী কৃষকরা তাদের জমি ফিরে পাওয়ার জন্য প্রশাসন ও সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
আপনার মতামত লিখুন :